শহুরে অন্ধকার না কি নাগরিকার অন্তরাল? যথা দেখিতং তথা লিখিতং; রাতের কলকাতা
হেমেন রায় লিখেছিলেন, "জাল জুয়াচুরি মিথ্যেকথা, এই তিন নিয়ে কলকাতা। লেখক স্বনামখ্যাত হয়েও স্বনামে এমন কথা লেখার সাহস তিনি দেখাননি। আড়াল আবডালের প্রসঙ্গ এলেই অবধারিতভাবে যে চরিত্রটি আমাদের চোখের সামনে এসে পড়ে তিনি রামায়ণ (কু)খ্যাত ইন্দ্রজিত। যিনি আরেকটু হলেই প্রিভিলেজড দেবতাপক্ষকে ল্যাজেগোবরে করে দিতেন, নেহাত দেবতাদের বকলমে বাল্মিকী এসে পরিত্রাণ করলেন। নাগরিক সমাজে বাস করে এমন চোখা মন্তব্য অন্তত স্বনামে করলে তাকেও যে ল্যাজেগোবরে হতে হবে, এই আশঙ্কাতেই সম্ভবত হেমেন রায় ছদ্মনাম নেন মেঘনাদ গুপ্ত। গোপনীয়তাটা লেখক পদবিতেও রক্ষা করেছেন অসামান্য মুন্সিয়ানায়। যদিও ব্যোমকেশ থুড়ি শরদিন্দু-র মতে বাঙালিরা ছদ্মনাম নিলেই পদবিতে গুপ্ত লেখে। সেদিক থেকে দেখলে হেমেনবাবু এ-যুগে জন্মালে সেরা বাঙালির নমিনেশন পেতেন। রবীন্দ্রনাথ ঘুম ভেঙে যতই দেখুন, কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই; বাস্তবে তেমনটা হয়নি। রবীন্দ্রনাথকে মিথ্যে করে সুমন গাইলেন, " পালটায় মন, পালটায় চারপাশ, রাস্তায় আসে নতুন রুটের বাস"। এই সূত্র ধরেই কলকাতাও পাল্টেছে। পাল্টেছে তার নৈশ যাপন। হেমেনবাবুকে হারিয়েছি আমরা, কলকাতা হারিয়েছে রাজধানীর মর্যাদ...