দেবীপক্ষে; দেবীর পক্ষে
শাক্ত কবি যখন আবেগতাড়িত হয়ে হিমালয়-জায়ার বয়ানে লিখলেন, "এবার আমার উপায় এলে আর উমা পাঠাব না"— মনের গভীরে তিনি জানতেন এ কেবলই কথার কথা। বাস্তবে, সামাজিক চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে উমার পিতৃগৃহে দীর্ঘ প্রবাস সম্ভবপর হবে না কোনমতেই। তাই দেবীপক্ষের শুরুতে যে প্রতিরোধ অলঙ্ঘ্য বলে মনে হয়েছিল, সে প্রতিরোধ দুর্বলতর হতে হতে দিনের শেষে ঘাড় ধাক্কার রূপ পরিগ্রহ করে। "যেও না নবমী নিশি" — মর্মে মেনকা যতই কাঁদাকাটা করুন না কেন, তিনি নিজেও এ কথা জানতেন, যে নবমীর রাত পোহালে যদি তার মেয়ে শ্বশুরবাড়িমুখো না হয়, তবে তার মেয়ের বধ করা সমস্ত অসুর সামাজিকতার অব্যর্থ বরে বেঁচে ওঠে তার চারপাশে বর্বর নৃত্য আরম্ভ করবে এবং তার মেয়ে দশ হাতেও সমাজের পাঁচ কান বন্ধ করতে পারবে না। বোধনের বাজনার গভীরে যে বিসর্জনের প্রস্তুতি চলে, এই রূঢ় সত্যকেই কোমলতার কিংখাবে ঢাকতেই এত কথা, এত গান, এত গল্প আর এত আয়োজন। এত মলাটের প্রয়োজন এই কারণেই। দিনশেষের গলা ধাক্কায় মেয়ের ঘাড় ভেঙে যায় যাক ক্ষতি নেই, কিন্তু তার হৃদয় যেন অক্ষত থাকে। ভগ্নহৃদয়ে সে শ্বশুরবাড়ী গেলে সেখানে বাপের বাড়ীর নিন্দে হবে। এই দ্বি-চা...